ভাত দে হারামজাদা | রফিক আজাদ | দুর্ভিক্ষ ১৯৭৪ | শেখ মুজিব কর্তৃক নিষিদ্ধ কবিতা | Bhaat De Haramjada
Udbastu Pandulipi Udbastu Pandulipi
724 subscribers
1,125 views
31

 Published On Premiered Sep 6, 2024

#banglakobita #banglakobitaabritti #রফিক_আজাদ #বাংলাকবিতাআবৃত্তি #বাংলা
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে ব্যাপক দুর্নীতির কারণে একটি দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় যার ফলে সেই সময়ে দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়। সেই সময় দৈনিক ইত্তেফাক-এর এক সাংবাদিক জাল পরিহিত এক ব্যক্তি ও অন্য একজনের বমি খাওয়ার ভান করার ছবি তুলে পত্রিকায় প্রকাশ করেন। এই ছবিগুলো দেখে রফিক আজাদ রেগে গিয়ে কবিতাটি লেখেন। কবিতাটি প্রকাশিত হয় তার সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে কাব্যগ্রন্থে। কবিতাটির জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার বইটি নিষিদ্ধ করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রতি কোনো মন্তব্য না করলেও, রফিক আজাদকে কবিতাটি লেখার কারণ লিখিত আকারে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শকের নিকট বিশেষ শাখার দপ্তরে জবাবদিহি হিসেবে জমা দিতে হয়।

ভাত দে হারামজাদা
- রফিক আজাদ

ভীষন ক্ষুধার্ত আছিঃ উদরে, শারীরবৃত্ত ব্যেপে
অনুভূত হতে থাকে – প্রতিপলে – সর্বগ্রাসী ক্ষুধা
অনাবৃষ্টি যেমন চরিত্রের শস্যক্ষেত্রে জ্বেলে দেয়
প্রভূত দাহন – তেমনি ক্ষুধার জ্বালা, জ্বলে দেহ
দু’বেলা দু’মুঠো পেলে মোটে নেই অন্য কোনও দাবি
অনেক অনেক-কিছু চেয়ে নিয়েছে, সকলেই চায়ঃ
বাড়ি, গাড়ী, টাকাকড়ি- কারো বা খ্যাতির লোভ আছে;
আমার সামান্য দাবিঃ পুড়ে যাচ্ছে পেটের প্রান্তর-
ভাত চাই-এই চাওয়া সরাসরি – ঠান্ডা বা গরম,
সরূ বা দারুণ মোটা রেশনের লাল চাল হ’লে
কোনো ক্ষতি নেই মাটির শানকি ভর্তি ভাত চাইঃ
দু’বেলা দু’মুঠো পেলে ছেড়ে দেবো অন্য সব দাবি!
অযৌক্তিক লোভ নেই, এমনকি নেই যৌন ক্ষুধা-
চাইনি তো নাভিনিম্নে পড়া শাড়ি, শাড়ির মালিক;
যে চায় সে নিয়ে যাক – যাকে ইচ্ছা তাকে দিয়ে দাও –
জেনে রাখোঃ আমার ও সব এ কোনও প্রয়োজন নেই।

যদি না মেটাতে পারো আমার সামান্য এই দাবি,
তোমার সমস্ত রাজ্যে দক্ষযজ্ঞ কান্ড ঘটে যাবে;
ক্ষুধার্তের কাছে নেই ইষ্টানিষ্ট, আইন-কানুন –
সমুখে যা পাবো খেয়ে নেবো অবলীলাক্রমে;
যদি বা দৈবাৎ সম্মুখে তোমাকে, ধর, পেয়ে যাই –
রাক্ষুসে ক্ষুধার কাছে উপাদেয় উপাচার হবে।
সর্বপরিবেশগ্রাসী হ’লে সামান্য ভাতের ক্ষুধা
ভয়াবহ পরিনতি নিয়ে আসে নিমন্ত্রণ করে!

দৃশ্য থেকে দ্রষ্টা অবধি ধারাবাহিকতা খেয়ে ফেলে
অবশেষে যথাক্রমে খাবোঃ গাছপালা, নদী-নালা,
গ্রাম-গঞ্জ, ফুটপাথ, নর্দমার জলের প্রপাত,
চলাচলকারী পথচারী, নিতম্ব-প্রধান নারী,
উড্ডীন পতাকাসহ খাদ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীর গাড়ী-
আমার ক্ষুধার কাছে কিছুই ফেলনা নয় আজ।
ভাত দে হারামজাদা, তা না হলে মানচিত্র খাবো।

show more

Share/Embed