Bangla Bazar | অশিক্ষা এবং বিজেপি।
BANGLA bAZAR BANGLA bAZAR
79.1K subscribers
10,765 views
1K

 Published On Oct 16, 2024

অশিক্ষা এবং বিজেপি।
রাজ্যপাল ধনখড় একদা অর্জুনের তীরে পরমাণু অস্ত্রের খবর দিয়েছিলেন, All India Council for Technical Education AICTE র সুপারিশ পলেটিকনিক এ বেদ উপনিষদ পড়ানোর সুপারিশ কর্যকর হচ্ছে।, এ নিয়ে তো আলোচনা করতেই হবে, সি এ এ র প্রচারে নেমেছিলেন রাখি সাওয়ন্ত আর সেই প্রেক্ষিতেই বিজেপি সরকারের ১২ টা ভুল যা দেশ কে ক্রমশঃ ধ্বংশের পথে ঠেলে দিচ্ছে, তা নিয়েও আলোচনা করবো। তবে সবথেকে আগে এই মুহুর্তে যে খবর শুনে এ বাংলার বেশির ভাগ মানুষের গা রি রি করছে তা দিয়ে শুরু করি।
দিলীপ ঘোষ, আজাদী প্রসঙ্গে মহান নেতা দিলীপ ঘোষ বলেছেন এই বাংলা দেশদ্রোহীদের গড়। কে এই দিলীপ ঘোষ? বছর ছ সাত আগে এই বাংলায় আসা এক আধা বা তারচেয়েও কম বাঙালি বিজেপি নেতা। উনি প্রতিবাদী দের কুকুরের মত গুলি করে মারতে চান, কদিন আগে কুকুরের মৃত্যু নিয়ে মরা কান্না জোড়া অভিনেত্রী রা এখন বিজেপি তা তো তাই নিদেনপক্ষে কাউন্সিলর হবার আশ্বাস পেয়ে ঘরে বসে হনুমান চাল্লিশা পড়ছেন, যে কথা বলছিলাম, ইনি প্রতিবাদীদের কুকুরের মত গুলি করে মারতে চান, এনার বিদ্যে বলে বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সহজ পাঠ লিখেছিলেন। সেই উনি যিনি জন্ম ইস্তক হাফ প্যান্ট পরে আর এস এস করেছেন সেই দিলীপ ঘোষ বললেন এই বাংলা হল দেশদ্রোহিদের গড়। এনার গুরুদেব কে? সাভারকার, যিনি ইংরেজদের কাছে ৫ বার মুচলেকা লিখে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন, আর একজন গুরুদেব হেডগাওয়ার ৪২ এ ভারত ছাড় আন্দোলনের সময় লিখিতভাবে ইংরেজদের জানিয়েছিলেন যে তাঁর সংগঠন মানে আর এস এস এই ভারত ছাড় আন্দোলনের বিরোধিতা তো করবেই, এই আন্দোলন কে আটকাতে ইংরেজদের সাহায্য করবে। এই উপদেশ শুনেই অটলবিহারি বাজপাই ইংরেজদের কাছে আন্দোলনকারীদের নাম বলে দিয়েছিলেন, যার জন্য তাদের জেল হয়। এই দিলীপ ঘোষের আর এস এস এর একজনও স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেনি, একজনও জেল যায় নি, একজনও ফাঁসি তে চড়েনি, সেই দিলীপ ঘোষ এই বাংলার মানুষ কে নিয়ে কথা বলছে। দিলীপ ঘোষ নিজের পড়াশুনোর তথ্য ভুল দিয়েছে, অবশ্য এ তো ওনাদের উত্তরাধিকার, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, একদা শিক্ষামন্ত্রী স্মৃতি ইরানি সবই তো একই পথের পথিক। তবুও ওর জন্য আবার এই তথ্য টা বের করা যাক, আন্দামান জেলে ৫৮৫ জন বন্দী ছিলেন সেখানে অবিভিক্ত বাংলার বাঙালি বন্দির সংখ্যা ছিল ৩৯৮, মানে ৬৮ %।এরপর পাঞ্জাব ৯৫ জন, মহারাষ্ট্র ৩ জন, বিহার ১৭ জন, ইউপি ১৮ জন, কেরালা ১৪ জন, অন্ধ্রপ্রদেশ ৮ জন ওড়িষা ৫ জন । দিলিপবাবু এগুলো সংসদে, মানে আপনি যেখানে দিল্লিতে যান, সেই লোকসভায় আপনার দলের সরকারের দেওয়া তথ্য। বোঝার ক্ষমতা থাকলে বুঝুন তারপর বাংলার দেশপ্রেম নিয়ে কথা হবে। এ বাংলার প্রত্যেকটা মানুষের উচিত এই হাফ বাঙালি দেশদ্রোহীর কথার জবাবে তাকে ঘেরাও করে রাখা যতক্ষণ না সে ক্ষমা চাইছে।
পরের বিষয়ে আসি, যে দেশে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন গণেশের কাটা মাথায় হাতির মাথা লাগানো হয়েছিল প্লাস্টিক সার্জারি করে, সে দেশে তাঁর পাঠানো রাজ্যপাল আর কত আলাদা হবে? এমনিতেই তিনি এ রাজ্যে মস্ত কমিক ফিগার, কেউ তার কথা শোনে না, কেউ তাকে মানে না, গাঁইয়া না মানে আপনি মোড়ল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তারপর আবার নতুন তথ্য এনে হাজির করলেন। মহাভারত রামায়ণের যুগে প্লেন ছিল আর মহাভারতে অর্জুনের তীরের ডগায় বসানো ছিল পারমাণবিক বোমা। ওদিকে প্রধানমন্ত্রী এ প্লাস বি হোল স্কোয়ারের ফরমুলা বোঝাচ্ছেন,সে এক রগড়।
এদেশে রবিঠাকুর, জগদীশ চন্দ্র বোস, সত্যেন বোস, হোমি ভাবা, মেঘনাথ সাহা জন্মেছিলেন, সেই দেশেও এরা শুধু জন্মালেও এক কথা ছিল, এরা প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল।
এবং স্বাভাবিক কারণেই এনারা যা শিখেছেন, যা বুঝেছেন তার প্রচার ও প্রসার করতে চান। ট আমাদের দেশে All India Council for Technical Education AICTE আছে, তারা টেকনিকাল কলেজে, পলেটিকনকে কী পড়ানো হবে তা ঠিক করেন। এতদিন সংশ্লিষ্ট বিষয় মানে মেকানিকাল, কি ইলেক্ট্রিকাল কি কমপিউটার ইত্যাদি মূল বিষয়ের সঙ্গে ছিল economics and accountancy, project manegment, professional orientation, sustainable development ইত্যাদি বিষয়, এর একটা কি দুটো ছাত্র দের বেছে নিতে হত বা কলেজ থেকেই ঠিক করে দেওয়া হত, এগুলো কমপালসরি সাবজেক্ট ছিল। এখন এসব অপশোনাল, মানে ছাত্র রা পড়তেও পারে তাহলে কমপালসারি কী? বেদ, হ্যাঁ বেদ পড়তেই হবে, আর যোগ ব্যায়াম করতেই হবে। আচ্ছা ভাবুন তো আপনার ইলেক্ট্রিসিয়ান ঘরে এসে বেদ পাঠ করছেন। হাস্যকর শোনাচ্ছে না, আপনি হাসছেন কিন্তু নরেন্দ্র মোদী ধনখড় সাহেব রা জানেন যে কী করতে চলেছেন। সবটা চুলোর দোরে পাঠিয়ে দিয়েছেন এবার শিক্ষা ব্যবস্থা টা নিয়ে খেলা ধুলো শুরু। এ আই সি টি ই এই সুপারিশ করেছেন, কিন্তু শিক্ষা তো রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়, তো আমরা জানতে চেয়েছিলাম রাজ্যের মন্ত্রীর কাছে, কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী জানালেন এ রাজ্যে এসব লাগু হবে না। মানে আবার কেন্দ্র রাজ্য বিরোধের আরো একটা দরজা খুললো। পলেটিকনিক, বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক ছাত্রের খানিক ইকোনমিক্স বা অ্যাকাউনটেন্সি জানলে ভাল হয়, প্রফেশনাল ওরিয়েন্টেশন প্রয়োজনীয়, কিন্তু যোগ ব্যায়াম? বা বেদ? ঋক সাম যজু অথর্ব বেদ? তার কী কাজে লাগবে? কাজে লাগা নয়, আমাদের ইতিহাস পালতাতে চায় এরা, আমদের বিজ্ঞানের ধারণা পাল্টাতে চায়, নাগরিকদের মানসিক গঠন পাল্টাতে চায়, দেশ টা কে হিন্দু রাষ্ট্র বানাতে চায়, ঠিক যে কারণে তারা সি এ এ বা এন আর সি র কথা বলছে, ঠিক সেই কারণেই তারা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বেদ পড়ানোর কথা বলছে। ২০১৯ এর প্রস্তাবিত সিলেবাসে যা যা পড়াতে হবে বলা আছে তা হল বেদ, উনবেদ, বেদাংগ এবং সেটাও কম্পালসারি সাবজেক্ট। আমরা তা হতে দিতে পারি না। হতে দেব না।
এবার আসি সেই ১২ বিষয়ের বিরাট ভুলের কথায় যা এই সরকার করেই যাচ্ছে, যার ফলে দেশ পৌঁচেছে ধ্বংশের শেষ সীমানায়।

show more

Share/Embed